বৃহষ্পতিবার রাতের কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডবে নওগাঁর সাপাহারে আম ঝরে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যার ফলে লোকসানের আশঙ্কায় মাথায় হাত পড়েছে আমচাষীদের। বাগান থেকে ঝরে পড়া কাঁচা আম বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকা কেজি দরে। সম্প্রতি কিছুদিন আগে ঝড়ে পড়ে যাওয়া আমের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগে আবারো কালবৈশাখীর কবলে আম ঝরে যাওয়ায় চরম হতাশায় পড়েছেন স্থানীয় আমচাষীরা।
সদরের আমবাজার সহ উপজেলার বিভিন্ন মোড়গুলোতে ঝরে পড়া আম কেনার ধুম পড়েছে ব্যবসায়ীদের মাঝে। ব্যবসায়ীরা প্রতিকেজি আম কিনছেন ২ থেকে ৩ টাকা কেজি দরে। ব্যবসায়ীরা বলছেন এসব আম আঁচার কোম্পানীরা কিনে থাকে। আমরা যে দামে কিনছি হয়তো যৎসামান্য লাভে আমাদের কাছে কোম্পানীরা আম কিনবে। আমচাষীরা বলছেন, ঝড়ের কবলে বাগানের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ আম ঝরে গেছে। ল্যাংড়া, নাগ ফজলী, আম্ররুপালি, বারি-৪ সহ বিভিন্ন জাতের আম ঝরে যাওয়ায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন আমচাষীরা। তবে ল্যাংড়া ও নাগফজলী জাতের আম বেশিরভাগ ঝরেছে।
উপজেলার সাহাপাড়া গ্রামের আমচাষী তরুণ সাহা বলেন, আমার ২০ বিঘা বাগানে প্রায় ১৫ মণ আম ঝরে গেছে। যা বাজারে বিক্রি করতে এসে মাত্র ২/৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
আমচাষী সাকোয়াত হোসেন বলেন, আমার প্রায় ১২শ” মণ আম ঝরে গেছে। শ্রমিক লাগিয়ে আম কুড়িয়ে বাজারে এনে বিক্রয় করতে হচ্ছে ২/৩ টাকা কেজি। যাতে করে শ্রমিকের মজুরী ও গাড়ি ভাড়াও ওঠেনা”।
উপজেলার উমইল গ্রামের আম ব্যবসায়ী মোকসেদুল হক বলেন, আমরা ১২০/১৩০ টাকা মণ আম কিনছি। আমরা এসব আম আঁচার কোম্পানীতে বিক্রি করবো। সেক্ষেত্রে হয়তো প্রতিমণ আমে ২০/২৫ টাকা লাভ হতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সংশ্লিষ্ট কৃষি দপ্তরের জরিপ অনুযায়ী পুরো উপজেলায় মোট ২ শতাংশ আম ঝরেছে। তবে ২/৩ টাকা কেজি দরে কাঁচা আম বিক্রয় হওয়ায় অনেকটা দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছেন, জরিপ অনুযায়ী কালবৈশাখীর কবলে পুরো উপজেলায় ২ শতাংশ আম ঝরেছে। যার মধ্যে ল্যাংড়া ও নাগফজলী বেশি ঝরেছে।
অভিজ্ঞরা বলছেন , আম উৎপাদরে ক্ষেত্রে এই এলাকার সুনাম সারাদেশেই রয়েছে। তবে যদি আম সংরক্ষণাগার বা কোন জুস কোম্পানী থাকতো তাহলে কাঁচা আম বিক্রয়ে এতোটা লোকসান বহন করতে হতোনা আম চাষীদের। কিছুদিন আগে ও গেলো রাতের কালবৈশাখীর তান্ডব আমের উপর প্রভাব ফেলেছে। যাতে করে এ বছরে আম বাজারের গতি অনেকটা পাল্টে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন অভিজ্ঞ মহল।